বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি, ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্ট ও হরেক রকম লোভনীয় প্যাকেজ
দিয়েও জমছে না গুলশানের রেস্তোরাঁগুলো। একসময় সন্ধ্যার পর গুলশানের
রেস্তোরাঁগুলোতে গাড়ি রাখার জায়গা হত না। আর এখন রাতের বেলায় ২-৩টির বেশি
গাড়ি চোখে পরে না।
সরেজমিনে গুলশান ১ ও ২ নম্বরে অবস্থিত রেস্তোরাঁগুলোতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গত
১ জুলাই গুলশানের আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা ও জিম্মিদের হত্যার
ঘটনায় আতঙ্কে গুলশানের রেস্তোরাঁগুলোতে কমেছে ক্রেতাদের সমাগম।
সোমবার
ও মঙ্গলবার সরেজমিনে গুলশান-২ এর গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফেতে গিয়ে দেখা যায়,
রেস্তোরাঁটিতে নেই চিরচেনা ভিড়। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন ব্যক্তি খাবার
খাচ্ছেন। বাইরে মাত্র কয়েকটি গাড়ি পার্ক করা। মূল ফটকের বাইরে সশস্ত্র ১
জনসহ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী।
রেস্তোরাঁটিতে খেতে আসা আহসানুর রহমান
নামে এক ব্যক্তি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে রেস্তোরাঁর বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের
জায়গা থাকতো না। গাড়ি রাস্তায় পার্ক করতে হতো। অথচ আজ (সোমবার) হাতেগোনা
কয়েকটি গাড়িই চোখে পড়লো।’
ওই দিন (মঙ্গলবার) রাত ১০টায় গুলশান-২
নান্দুসে গিয়ে দেখা গেছে, ভোজনবিলাসীদের রেস্টুরেন্টে টানতে সন্ধ্যা ৭টা
থেকে ১০টা পর্যন্ত যেকোনো মিলের সঙ্গে একটি সাইড ফ্রি দিচ্ছে তারা। অথচ
দোতলা রেস্টুরেন্টে সবমিলে ৫০-৬০ জনের খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও গ্রাহকের
সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১২-১৫ জন।
গ্রাহক
টানতে ওয়েস্টিনের বুফেট লাঞ্চ-ডিনারেও দেয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। বেশ কয়েকটি
ব্যাংকের কার্ড দিলে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টে ওয়েস্টিনে বুফেট খাওয়া যাচ্চে।
অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস গ্রাহকরা পাচ্ছেন বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি (১ জন খেলে
আরেকজনের ফ্রি খাওয়া) অফার।
হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে হামলার পর থেকে অন্যান্য রেস্তোরাঁর মতো গুলশানের বিবিকিউ বাংলাদেশ রেস্তোরাঁতেও কমেছে গ্রাহকের সংখ্যা।
এবিষয়ে
জানতে চাইলে বিবিকিউ বাংলাদেশ-এর গুলশান ব্রাঞ্চের ম্যানেজার রাশেদুল আলম
জাগো নিউজকে বলেন, আগের চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কমেছে। আগে রাত সাড়ে
১১টায় রেস্তোরাঁ বন্ধ করতাম। এখন সাড়ে ১০টায় শেষ অর্ডার নেই।
আর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদের নির্দেশনা অনুযায়ী রাত ১১টায় বন্ধ করতে হয়।
গুলশানের
হান্ডি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মুরাদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, রাত ৮টার পর
এমনিতেই ক্রেতা কমে যায়। রাতে ক্রেতার সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। রাত
১০টার পর হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা থাকে।
গুলশানের নামিদামী কয়েকটি
রেস্তোরাঁয় বিদেশিদের উপস্থিতির সংখ্যা জানতে তিনটি আন্তর্জাতিক চেইন
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিদেশি
গ্রাহক ও তাদের উপস্থিতির বিষয়ে কাউকে কোনো ধরণের তথ্য দিতে নিষেধ করা
হয়েছে।
এদিকে হামলার পর থেকে ভীত গ্রাহকদের জন্য আকর্ষণীয় অফারের
পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ফ্রি হোম ডেলিভারি ব্যবস্থাও চালু করেছে গুলশানের
অর্ধশতাধিক রেস্তোরাঁ।
একই অবস্থা ধানমন্ডির রেস্তোরাঁগুলোরও।
ধানমন্ডির হান্ডি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম বলেন, গুলশানের
হামলার পর রাতে অনেকেই আতঙ্কের কারণে খেতে আসেন না। ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার
মধ্যে গেস্ট থাকে না বললেই চলে।
-jagonews24
0 Response to "লোভনীয় অফারেও জমছে না গুলশানের রেস্তোরাঁগুলো"
Post a Comment